সাবস্ক্রাইব করেছেন তো? না করলে এখানে ক্লিক করুন!

E2 VISA For Bangladeshis - ভিসা মাত্র ১০০,০০০ ডলার

আপনি Bangla Vibes ইউটিউব চ্যানেল থেকে আমাদের ভিডিও দেখে এই আর্টিকেল পড়তে এসেছেন? তাহলে জানাচ্ছি অসংখ্য ধন্যবাদ। ভিডিও টি না দেখে থাকলে এই আর্টিকেলের একেবারে নিচে ভিডিওটি রয়েছে দেখে নিতে পারেন। সরাসরি মূলবিষয়ে যাবো, সময় নষ্ট করা আমার একেবারেই পছন্দ না।

E2 ভিসা একধরনের ইনভেস্টর ভিসা। প্রথমেই বলি, এই ভিসা আপনাকে সাময়িকভাবে আমেরিকায় থাকার সুযোগ দিবে আপনি পারমানেন্টলি থাকতে পারবেন না। তাহলে What's the catch?

এই ভিসায় আপনি সর্বোচ্চ ৫ বছর টানা আমেরিকায় থাকতে পারবেন (ক্ষেত্র বিশেষে কম হতে পারে)। তবে, আপনি এই ভিসাকে বার বার রিনিউ করাতে পারবেন। প্রতিবার রিনিউ হবে সর্বোচ্চ ২ বছরের জন্য। তার মানে দাড়ায় আপনি আজীবন আমেরিকায় থাকতে পারবেন কিন্তু সময়মত আপনাকে ভিসা রিনিউ করিয়ে নিতে হবে।

আপনার সাথে আপনার পরিবার ভিসা পাবে?

আপনার স্বামী অথবা স্ত্রী আপনার সাথে আসার সুযোগ পাবে। আপনার সন্তানও আসতে পারবে তবে তার বয়স হতে হবে ২১ বছর বার তার চেয়ে কম। আপনার স্ত্রী অথবা স্বামী যিনি আপনার সাথে আসবেন সে আমেরিকায় কাজ করতে পারবে। তাকে I-765 ফর্ম পূরন করতে হবে।

E2 ভিসায় কত টাকা খরচ হবে?

যেহেতু E2 একটি ইনভেস্টমেন্ট ভিসা, তাই আপনাকে অন্তত এক লক্ষ আমেরিকান ডলার বা ১০০ হাজার ডলার ইউএস ডলার ইনভেস্ট করার সামর্থ্য থাকতে হবে। এটা আপনাকে প্রমানও করতে হবে। এই মোট অর্থের মাঝে কমপক্ষে ৫০% ভাগ আপনার নিজস্ব হতে হবে। বাকিটা লোন হতে পারে।

কীভাবে অ্যাপ্লাই করবো?

তার আগে আপনাকে বার বার আমেরিকায় ট্যুরিস্ট ভিসায় যেটাকে আমরা বলি B1/B2 সেই ভিসা একাধিকবার যাওয়া আসা করা লাগতে পারে। আমেরিকায় ব্যবসা করার জন্য সেখানকার মার্কেট বোঝা এবং বিজনেস প্ল্যানিং এর কারনে আপনার যেতে হতে পারে। না গেলেও ক্ষতি নেই। এটা আপনার প্রয়োজনীয়তার উপর ডিপেন্ড করে।

সেই সাথে, আপনি যে ব্যাবসায় টাকা ইনভেস্ট করছেন সে ব্যবসা থেকে যথেষ্ট প্রফিট যেনো হয় সেভাবে প্ল্যান করতে হবে। সেই সাথে আমেরিকা অবস্থিত যোগ্য মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রথমেই যে বিষয়টা নিশ্চত করতে হবে আপনি যেই এন্টারপ্রাইজে ইনভেস্ট করবেন সেটা আমেরিকান আইন অনুযায়ী বৈধ এবং লিগ্যাল কোনো ঝামেলা নেই। তারপর আপনাকে অনেকগুলো বিষয়ের প্রমান দেখাতে হবে এবং ফর্ম ফিলাপ করতে হবে। আপনার যে ইনভেস্ট করে ব্যবসা করার উদ্দেশ্যটাই মূখ্য সেটা প্রমান করতেই হবে। নিচে একটি তালিকা দেয়া হলো যে বিষয়গুলো আপনার E2 ভিসা অ্যাপ্লিকেশনে সংযুক্ত করতে হবে (not limited to):

১। DOS Form DS-156, Nonimmigrant Visa Application

২। DOS Form DS-156E, Nonimmigrant Treaty Trader / Investor Application

৩। DOS Form DS-157, Supplemental Nonimmigrant Visa Application, for all male applicants between the ages of 16 and 45

৪। আপনার পাসপোর্টোর কপি। আপনার পাসপোর্ট মেয়াদ যেন অন্তত ৬ মাস থাকে। সেই সাথে আপনার পাসপোর্টে যেন অন্তত একটি খালি পৃষ্ঠা থাকে ভিসার জন্য।

৫। আপনার ২ কপি রঙিন ছবি। আমেরিকান ভিসার জন্য যেভাবে ছবি তোলে ঠিক সেভাবেই।

৬। আপনার ভবিষ্যত ব্যাবসায়িক ইনভেস্টমেন্ট এর সম্পূর্ন প্ল্যান। এটা খুব নিখুতভাবে আপনাকে তৈরি করতে হবে যাতে এখন ইনভেস্ট করলে আগামী ৫ বছর ১০ বছর ২০ বছর পর কেমন হবে সেটাও উল্লেখ থাকে।

৭। আপনার বায়োডাটা বা সিভি যোগ করবেন।

৮। প্রমান দেখাতে হবে যেখানে আপনি ইনভেস্ট করছেন সেখানে আপনি এক্সিকিউটিভ লেভেলে কর্মরত থাকবেন, অথবা, আপনার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কোনো দক্ষতা রয়েছে যা কোম্পানীর/ফার্মের অপারেশনে বড়ধরনের ভূমিকা রাখবে।

৯। আপনার ইনভেস্ট করার অর্থ এবং অর্থের মালিকানা বা যদি লোন নিয়ে থাকেন সেটার ডকুমেন্ট, সাথে ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ফিনানসিয়াল রেকর্ড, সেভিংস ইত্যাদি সংযুক্ত করবেন।

১০। আপনি যে ইনভেস্টমেন্ট আমেরিকায় পাঠাবেন সেটার প্রমান যেমন ব্যাংক ড্রাফট, ট্রান্সফার এক্সচেঞ্জ পারমিট অথবা রিসিপ্ট সংযুক্ত করবেন।

১১। আপনি যেখানে ইনভেস্ট করছেন সেখানে আপনি কীভাবে ইনভেস্ট করছেন এবং বিজনেস করার প্লান করছেন সেটার প্রমান সহ সংযুক্ত করবেন। এটা হতে পারে কোনো অনলাইন পাবলিকশেন (আর্টিকেল), পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট ডকুমেন্ট, সেই কোম্পানীর স্টাফদের তালিকা, তাদের এবং কোম্পানীর শেয়ার, স্টাফদের পদের নাম, চাকরির সময়সীমা, কোম্পানীর লাইসেন্স, লীজিং ডকুমেন্ট ইত্যাদি।

১২। আপনি আমেরিকায় ইনভেস্ট করার পর সেটার প্রমান। রিসিপ্ট, ব্যাংক স্টেটমেন্ট ইত্যাদি।

১৩। আপনার ইনভেস্টের পরিমান যথেষ্ট কিনা সেটার প্রমান। ফিনানসিয়াল স্টেটমেন্ট, অডিট রিপোর্ট, ট্যাক্স রিটার্ন ইত্যাদি।

১৪। প্রমান করতে হবে এন্টারপ্রাইজ মার্জিনাল নয়। দেখাতে হবে পেরোল রেকর্ড, IRS Form 941, ব্যক্তিগত ট্যাক্স রিটার্ন, অন্যান্য ব্যক্তিগত সম্পত্তির হিসাব এবং অন্যান্য ইনকামের হিসাব।

১৫। প্রমান করতে হবে যে ব্যবসায় ইনভেস্ট করা হচ্ছে সেটা একটা আসল ও প্রথাগত ব্যবসা। এটা বাৎসরিক রিপোর্ট, প্রোডাক্ট ক্যাটালগ, সেলস লিটারেচার, নিউজ আর্টিকেল ইত্যাদির মাধ্যমে প্রমান করা যেতে পারে। 

কী? মাথা ঘুরাচ্ছে? আমার তো মনে হয় একশো হাজার ডলার এর চেয়ে এই লিস্টে যা আছে সেগুলো ঠিক ঠাক মত জোগার করা হচ্ছে কঠিন কাজ। তবে এজন্য আপনাদের আমি রিকমেন্ড করবো একজন আমেরিকান লইয়ার ঠিক করে তার গাইডেন্সে সবকিছু করাতে। এসব জিনিস অনেক ক্রিটকাল এবং অনেক ফাকফোঁকর থাকে যেগুলো একজন সাধারন ব্যক্তির জানা সম্ভব না।

 

বোনাস পয়েন্ট:

১। আপনি বর্তমানে আমেরিকায় নন-ইমিগ্র্যান্ট অবস্থায় বৈধভাবে থাকলে আপনি E2 ভিসায় স্ট্যাটাস পরিবর্তন করতে পারবেন।

২। আমেরিকায় অবস্থান করার সময় E2 ভিসা অ্যাপ্লাই করলে ভিসা পেতে সময় লাগতে পারে ৫ থেকে ৬ মাস। ১৫ দিনেও ভিসা পাওয়া যায় ফর্ম ফিলাপে বেশি অর্থ খরচ করলে।

৩। আমেরিকার বাইরে থেকে যেমন বাংলাদেশ থেকে ভিসার জন্য অ্যাপ্লাই করলে সময় লাগতে পারে ৪ থেকে ৬ মাস। এটা নির্ভর করে আমেরিকান এম্বেসীর সিরিয়ালের উপরে। E2 ভিসার সিরিয়াল ছোট তাই অতিদ্রুত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

৪। আপনার মাথায় প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে বিজনেস টা পাবো কোথায় ইনভেস্ট করার জন্য? আমেরিকায় অবস্থিত বিভিন্ন ফ্রাঞ্চাইজ, রেস্টুরেন্ট, কনসালটিং বিজনেস ইত্যাদি প্রতিনিয়ত খুঁজবেন যেগুলো সেল করা হচ্ছে পুরোটা বা পার্সেনটেজ। এইতো, এভাবেই পাবেন। প্রচুর রিসার্চের প্রয়োজন এখানে, শুধু বিজনেস দেখলে হবে না, কোথায় অবস্থিত, প্রফিট কেমন হয়, আবহাওয়া, রিস্ক ইত্যাদি বিবেচনা করতে হবে।

এভাবে কেউ বলে না। আপনার এই আর্টিকেল ভালো লাগলে আমাদের Bangla Vibes চ্যানেলটা ঘুরে আসবেন। অনেক উপকারী ভিডিও আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। Information Simplified.

 

Thank you. Take care.


অন্যান্য পোস্ট